Saturday, April 18, 2015

সাহাবা যুগে তাকলিদের প্রমাণ পর্ব (৬)

সাহাবা যুগে তাকলিদের প্রমাণ পর্ব (৬)
******************************************
সাহাবা যুগে তাকলিদের প্রমাণ পর্ব (১)
******************************************
প্রশ্নঃ আমাদের অনেক ভাই বলেন, সাহাবা যুগে তাকলিদ ছিলনা । তাই আমরা ও কারো তাকলিদ করবোনা । / মাজহাব মানবনা । এটা কি ঠিক ?
উত্তরঃ না ভাই, এটা মোটেও ঠিক নয় । দেখুন , আমি আবারও একটা বিষয় পরিষ্কার করছি । মাজহাব মানা/ তাকলিদ করার মানে কিন্তু এই নয় যে কোন ইমাম মনগড়া কথা বলে যাবেন , আর আমরা তা মেনে নেব । বরং তাকলীদ/ মাজহাব মানার অর্থ হল, একজন ধর্ম বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন-সুন্নার আলোকে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিবেন , আর যারা এ বিষয়ে জানেনা বা জানার সুযোগ নেই তারা তার কথা মতে আমল করবে । এ পদ্ধতি সবসময় ছিল ।
রাসুলের যুগেও সাধারণ সাহাবায়ে কেরাম , যারা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতেন তারা আলেম সাহাবাদের কাছ থেকে জেনে আমল করতেন । আমাদের যে ভাইগণ মাজহাব না মেনে সরাসরি কোরআন হাদিেসর উপর আমল করবেন বলেন, তারাও কিন্তু প্রতিটি কাজ কোরআন হাদিস খুলে তারপর করেন না । বরং তার নিকট গ্রহনযোগ্য শাইখ/ ইমামের কথা মানেন এবং তার রেফারেন্স দেন । যেমন , শাইখ গালিব, জাকির নায়েক, বিন বাজ , আলবানি, ইত্যাদি ।
সুতরাং আমরা হানাফি মাজহাব মানার অর্থ হল, ইমাম আবু হানিফা (রাহ”) কোরআন সুন্নার আলোকে যে সমাধান দিয়েছেন তা মানি । অর্থাৎ তার রেখে যাওয়া উসুল অনুযায়ী কোরআন হাদিস বুঝার চেষ্টা করি । এটা অবৈধ কিছু নয় । কেননা হাদিস যাচাই বাছাই করার বর্তমান নিয়ম কিন্তু রাসুলের যুগে ছিলনা । পরবর্তীতে আবিষ্কার হয়েছে। আমরা কিন্তু সেগুলো ঠিকই মানছি । তাহলে উসুলে ফিকহ মানতে সমস্যা কি?
প্রচারেঃwww.jirrubd.com
প্রমানঃ মদিনাবাসীর তাকলিদঃ
*******************************
একদল মদিনাবাসি হযরত ইবনে আব্বাস কে মাসআলা জিজ্ঞেস করল যে, ফরয তাওয়াপের পর বিদায়ী তাওয়াপের আগে যদি কোন মহিলার ঋতুস্রাব শুরু হয় তাহলে কি করবে? উত্তরে তিনি বললেন, বিদায়ী তাওয়াফ না করে মক্কা শরীফ ত্যাগ করতে পারবে । মদিনাবাসি যাইদ বিন সাবিতের অনুসরণ করতেন । তাই তারা বলল, আমরা যাইদ কে উপেক্ষা করে আপনার কথা মানতে পারিনা । যেহেতু আপনার ফাতওয়া যাইদের বিপরীতে । সুত্রঃবুখারি-২/৫৪১ ( ১৭৫৮-১৭৫৯)দেখুন, এখানে মদিনা বাসী যাইদ(রা) এর অনুসরণ করতেন যা তাকলিদে শাখসি ছিল । তাই তারা ইবনে আব্বাসের কথা সরাসরি না মেনে বলল ,আমরা আগে জাইদ কে জিজ্ঞাসা করি, তারপর । অথচ এ মাসআলায় ইবনে আব্বাস সঠিক ছিলেন । পরে ইবনে আব্বাস তাদেরকে বুঝিয়ে বললেন, তাহলে তোমরা মদিনায় গিয়ে উম্মে সুলাইম কে জিজ্ঞাসা করে নিবে ।সুত্রঃ আবু দাউদ-তায়ালাসি প্রঃ২২৯ পরবর্তীতে তারা তাই করল । যাইদ বিন সাবিত ও বিষয়টি তাহকিক করে ইবনে আব্বাসের কথা মেনে নেন । দেখুন, কি অপূর্ব অনুসরণ । সাধারনরা এমনিতেই মেনে নিল । আর যিনি বিজ্ঞ , তিনি তাহকিক করার পর মেনে নিলেন । সুতরাং সাহাবারা কারো অনুসরণ করেননি এমনটা বলা ঠিক হবেনা ।
তাছাডা নবী সাঃ পৃথিবী থেকে বিদায়ের পর সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪৪০০০ তনমধ্যে ১৪৯ জন ছিলেন মুজতাহিদ ছাহাবী ,আর বাকীরা ছিল সাধারন তবকার সাহাবী অথাত তাদের মধ্যে ঐ রকম এজতেহাদ করার ক্ষমতা ছিলনা ,আবার মুজতাহিদ ছাহাবীদের মধ্যে ৭ জন ছিলেন ১ম তবক্বা ২০ জন ছিলেন ২য় তবক্বার ও ১২২ জন ছিলেন ৩য় তবক্বার , গডে এ ১৪৯জন মূলত এ মুজতাহিদ ছাহাবীদের তাকলীদ করে ছিলেন প্রায় লক্ষাধীক ছাহাবায়ে কেরাম সুতরাং ছাহাবীদের যুগেই মুলত তাকলীদের সূচনা।
প্রচারেঃ www.jirubd.com

সাহাবা যুগে তাকলিদের প্রমাণ পর্ব (৩)
******************************************
প্রমানঃ হযরত আস ওয়াদ বিন ইয়াযিদ বর্ণনা করেন, মু”আজ ইবনে জাবাল গভর্নর হিসেবে ইয়ামানে আগমন করলে আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করি, জনৈক ব্যক্তি ১ কন্যা ও ১ বোন রেখে মারা গেছে। এখন তাদের মাঝে সম্পদ বণ্টনের পদ্ধতি কি হবে? তদুত্তরে তিনি প্রত্যেকের অংশ অর্ধেক বলে সমাধান দেন । বুখারি শরিফ – ৮/৩৫১, হাঃ ৬৭৩৪
পর্যালোচনাঃ ক* মুয়াজ( রা ) একজন নিদৃষ্ট ব্যক্তি মাত্র ।অথচ ইয়ামান বাসী তার অনুসরণ করা ওয়াজিব ছিল । অন্যথায় তাকে প্রেরণ অনর্থক ও অহেতুক গণ্য হবে । যা নবী সা. এর শানের খেলাফ ।
খ) মুয়াজের রা. ইয়ামান গমন রাসুলের যুগেই ছিল। এর মাধ্যমে নির্ধারিত ব্যক্তির অনুসরণ রাসুলের যুগেই শুরু হল । কেননা , রাসুলের জীবিত থাকাকালীন যাবতীয় বিষয়ে মুয়াজের অভিমত দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য ছিল ।
গ) প্রশ্ন ও উত্তর কোথাও দলিল উত্থাপন করা হয়নি । বরং তার প্রতি সু- ধারনার ভিত্তিতে তার কথা মানতে বাধ্য ছিলেন । এটাই তাকলিদে সাখছি ।
সুতরাং এ হাদিস থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে তাকলিদ সাহাবা যুগে ছিল।
প্রচারে: www.jirubd.com

No comments:

Post a Comment